কলকাতা বন্দরের উন্নতির (Port development) কারণ : কলকাতা একটি নদী-বন্দর। ভারতের প্রধান বন্দরগুলির মধ্যে বর্তমানে কলকাতা বন্দরের স্থান চতুর্থ হলেও একসময় এটি ছিল ভারতের শ্রেষ্ঠ বন্দর। যেসব অনুকূল অবস্থার কল্যাণে কলকাতা বন্দরের এতটা উন্নতি হয়, সেগুলি হল-
কলকাতা বন্দরের উন্নতির (Port development) কারণ –

ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী
উনবিংশ শতাব্দীতে ইংরেজরা কলকাতা বন্দর গড়ে তোলে। তখন কলকাতা ছিল ব্রিটিশ-ভারতের রাজধানী। নিজেদের দেশ (ইংল্যান্ড) থেকে সামরিক সাজসরঞ্জাম ও শিল্পজাত পণ্যদ্রব্য এখানে আনা এবং এখান থেকে চা, পাট প্রভৃতি কাঁচামাল নিজেদের দেশে নিয়ে যাওয়ার জন্য ইংরেজদের একটি বড়ো বন্দরের প্রয়োজন ছিল। সেই উদ্দেশ্যেই তারা হুগলি নদীর তীরে কলকাতা বন্দরটি গড়ে তোলে এবং এর উন্নতি ঘটায়।
নদীর নাব্যতা
ব্রিটিশ আমলে ভাগীরথী-হুগলি নদী অনেক বেশি নাব্য ছিল। তাই সমুদ্রগামী জাহাজসমূহ স্বচ্ছন্দেই এই হুগলি নদীপথে চলাচল করতে পারত।
বৃহদায়তন পশ্চাদ্ভূমি
পূর্ব ভারতের এক সুবিশাল এলাকা নিয়ে কলকাতা বন্দরের পশ্চাদ্ভূমি গঠিত। এলাকাটি কৃষিজ (চা, পাট, ধান প্রভৃতি), খনিজ (কয়লা, আকরিক লোহা, অভ্র চুনাপাথর, ডলোমাইট, বক্সাইট, ম্যাঙ্গানিজ প্রভৃতি) এবং বনজ সম্পদে অত্যন্ত সমৃদ্ধ। শুধু তাই নয়, পশ্চাদ্ভূমিতে পাট, চা, ইঞ্জিনিয়ারিং, রাসায়নিক, সিমেন্ট, কাগজ, লোহা-ইস্পাত প্রভৃতি বিভিন্ন প্রকার শিল্প আছে এবং এলাকাটি অত্যন্ত জনবহুল। সম্পদে পরিপূর্ণ এই পশ্চাদ্ভূমি কলকাতা বন্দরের উন্নতিতে বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করে।
উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা
ভাগীরথী-হুগলি নদীপথ, দক্ষিণ-পূর্ব রেলপথ, পূর্ব রেলপথ এবং কয়েকটি জাতীয় রাজপথের (২ নং, ৬ নং ও ৩৪ নং জাতীয় সড়কপথ) মাধ্যমে কলকাতার সঙ্গে সমগ্র পূর্ব ভারতের যে এক উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে, সেটিও কলকাতা বন্দরের উন্নতিতে সহায়তা করেছে।
প্রধান শিল্প ও বাণিজ্যকেন্দ্র
পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা পূর্ব ভারতের প্রধান শিল্প ও বাণিজ্য কেন্দ্র হওয়ায় স্বাভাবিকভাবে বন্দরটিরও উন্নতি ঘটেছে।
শ্রমিক প্রাপ্তির সুবিধা
কলকাতা অত্যন্ত জনবহুল মহানগরী। তাই এখানকার বন্দরের কাজের জন্য পর্যাপ্ত সুলভ শ্রমিকও পাওয়া যায়।
মৃদু জলবায়ু
কলকাতা এবং এর সংলগ্ন এলাকার মৃদু জলবায়ু কলকাতা বন্দরের উন্নতিতে যথেষ্ট সাহায্য করেছে।
====>>> ভাববাদী বা আদর্শবাদী (Idealist) রাষ্ট্রতত্ত্বের সীমাবদ্ধতাসমূহ
Beautiful